স্বাধীনতার বীর সাভারকর




আমার ছোটবেলা থেকেই দেশের ইতিহাস আমার খুব আগ্রহের বিষয় ছিল। বিশেষ করে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আমাকে আকর্ষণ করত সবচেয়ে বেশি। আর সেই ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে অনেক বীরের নাম। তাদের মধ্যে একজন বিখ্যাত নাম হলো বিনায়ক দামোদর সাভারকর।
সাভারকর ছিলেন মহারাষ্ট্রের নাশিক শহরের এক মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। তিনি ছিলেন একজন উজ্জ্বল ছাত্র এবং খুব অল্প বয়সেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা নেন এবং "হিন্দু মহাসভা" প্রতিষ্ঠা করেন।
সাভারকর অত্যন্ত দেশপ্রেমী ও সাহসী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি ব্রিটিশ সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিজের জীবনও বাজি রেখেছিলেন। তাকে বার বার গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটাতে হয়েছিল। কারাগারে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।
ক্যাল সেলুলার জেলে সাভারকর যখন বন্দী ছিলেন, তখন তিনি "হিন্দুত্ব" অনুশীলন শুরু করেছিলেন। হিন্দুত্ব হলো এক শাব্দিক প্রকাশ যা হিন্দু সমাজের সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক মানবতাকে ব্যাখ্যা করে। সাভারকর বিশ্বাস করতেন যে হিন্দুত্বই ভারতের প্রাণ এবং শক্তি। তিনি হিন্দু সমাজকে একত্রিত করার এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সাভারকরের রাজনৈতিক দর্শন বিতর্কিত ছিল। তাঁকে হিন্দুত্বের জনক মনে করা হয় এবং তাঁর মতাদর্শকে কিছু লোক হিন্দু জাতীয়তাবাদ হিসেবে দেখে। যাইহোক, সাভারকর নিজেকে জাতীয়তাবাদী এবং হিন্দুত্ববাদী বলে দাবি করেছিলেন। তিনি ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছিলেন এবং তিনি বিশ্বাস করতেন যে হিন্দুত্বই ভারতের পরিচয়।
সাভারকর কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি ছিলেন একজন লেখক এবং কবিও। তিনি মারাঠি ও ইংরেজিতে বেশ কিছু বই লিখেছেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত বই "হিন্দুত্ব: হিন্দুদের একটি দর্শন"। এই বইয়ে তিনি হিন্দুত্বের ধারণা এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব সম্পর্কে লিখেছেন।
সাভারকর 26 ফেব্রুয়ারি, 1966 সালে মারা যান। তিনি ভারতের অন্যতম বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং তাঁর অবদান ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অতুলনীয়। তিনি একজন জটিল এবং বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন, কিন্তু তিনি নিঃসন্দে ভারতের ইতিহাসের একজন প্রধান ব্যক্তিত্ব ছিলেন।