সচিন রমেশ তেন্ডুলকর




ক্রিকেট জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যার নাম শুনলেই যে কারও মনে ভেসে ওঠে ক্রিকেটের খেলায় অসাধারণ দক্ষতা, মেধা ও মনোবল। জন্ম 24 এপ্রিল, 1973 সালে মুম্বাইয়ে তেন্ডুলকরের জীবনী পড়লে মনে হয় ক্রিকেট তার রক্তে মিশে গিয়েছিলো। স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পরে দ্বিতীয় ব্যাক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে 15 হাজার রান করার গौरব অর্জন।

তেন্ডুলকরের ব্যাটিং এতটাই অসচ্ছল ছিল যে তার বিরুদ্ধে বোলিং করা অনেক বোলারের জন্যই একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিলো। তিনি 2002 সালে, জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ওডিআই ম্যাচে 98 বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন, যা সে সময় বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল। তেন্ডুলকরের গেম সচেতনতা অতুলনীয় ছিল। তিনি ক্রিজে দাঁড়িয়ে বলটি কতটা কিভাবে সরানো হয়েছে তা খুব ভালো বুঝতে পারতেন।

  • তার অসাধারণ শট প্লেংয়ের জন্য তিনি ক্রিকেট জগতে সুপরিচিত।
  • তিনি ষষ্ঠ ভারতীয় এবং 11 তম খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে 100 সেঞ্চুরি করেছেন।
  • তিনি 2013 সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

একজন অসাধারণ ব্যাটসম্যান ছাড়াও, তেন্ডুলকর ভারতীয় দলের জন্য একজন দুর্দান্ত অধিনায়কও ছিলেন। তার নেতৃত্বে ভারত 2011 সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল, যা দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি মাইলফলক।

তেন্ডুলকরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সাথে সাথে তার ব্যক্তিগত জীবনও বেশ আলোচিত হয়েছে। তিনি একটি ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি অঞ্জলি তেন্ডুলকরকে বিয়ে করেন, যিনি একজন পেশাদার চিকিৎসক। দম্পতির দুটি সন্তান আছে, অর্জুন এবং সারা।

ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পরে, তেন্ডুলকর ভারতীয় দলের মূল্যবান পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেছেন এবং তিনি প্রায়ই ক্রিকেট বিশ্লেষণ এবং ভাষ্যে অংশ নেন। তিনি বর্তমানে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের আইকনিক খেলোয়াড় এবং ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ফ্র্যাঞ্চাইজি কেরালা ব্লাস্টার্সের সহ-মালিক।

স্যাক্রে ক্রেস্টে বিদ্যালয়ে তেন্ডুলকর

তেন্ডুলকর তার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মুম্বাইয়ের স্যাক্রে ক্রেস্টে স্কুলে। তিনি তার শৈশবকালের বেশিরভাগ সময় মাঠে ক্রিকেট খেলে কাটিয়েছেন। তিনি খুব শীঘ্রই তার প্রতিভা এবং দক্ষতা দ্বারা সবার নজর কাড়ে, এবং 12 বছর বয়সে তিনি রঞ্জী ট্রফিতে বোম্বে দলের হয়ে অভিষেক করেন।

স্যাক্রে ক্রেস্টে তেন্ডুলকরের কোচ ছিলেন আচরেকর স্যার। আচরেকর স্যার ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ কোচ যিনি তেন্ডুলকরের দক্ষতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি তেন্ডুলকরকে অনুশাসন এবং কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব শিখিয়েছিলেন।

অন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক

15 নভেম্বর, 1989 সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করাচিতে অনুষ্ঠিত টেস্ট ম্যাচে তেন্ডুলকর তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিষেক করেন। তিনি মাত্র 16 বছর এবং 205 দিন বয়সী ছিলেন, যখন তিনি টেস্ট ক্যাপ ছেড়েছিলেন। তিনি সেই ম্যাচে 15 রান করে আউট হয়েছিলেন, কিন্তু পরবর্তী বছরগুলিতে তিনি নিজেকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

তেন্ডুলকরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার চলাকালীন 200টি টেস্ট এবং 463টি ওয়ানডে ম্যাচে অংশ নিয়েছেন। তিনি টেস্ট ক্রিকেটে 15,921 রান এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে 18,426 রান করেছেন। তিনি টেস্ট এবং ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যান।

বিশ্বকাপ জয়

তেন্ডুলকরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো 2011 সালে ভারতকে বিশ্বকাপ জিতানো। ভারতের দল ছিল চ্যাম্পিয়ন, এবং তেন্ডুলকর তার সেরা ফর্মে ছিলেন। তিনি টুর্নামেন্টের শীর্ষ রান সংগ্রহকারী ছিলেন, 8 ম্যাচে 482 রান করেছিলেন।

বিশ্বকাপ জয় ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি বিশেষ মুহূর্ত ছিল। এটি ভারতীয় দলের কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্পের প্রমাণ ছিলো।

সম্মান এবং অর্জন

তেন্ডুলকর তার ক্যারিয়ারে অনেক সম্মান এবং পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি 1994, 1997, 2010 এবং 2011 সালে আইসিসি বর্ষসেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছিলেন। 2008 সালে তিনি পদ্ম বিভূষণ পুরস্কার পেয়েছিলেন,