ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং: কুস্তির একজন কীর্তিশীল ব্যক্তিত্ব




ভারতীয় কুস্তির জগতে একটি বিখ্যাত নাম হল ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং। তিনি একজন কৃতীর্মান কুস্তিগির ছিলেন যিনি দেশের জন্য অনেক পদক জিতেছেন। তিনি রাজনীতির সাথেও যুক্ত ছিলেন এবং দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

সিংয়ের জন্ম ১৯২৮ সালের ২৩ জানুয়ারী উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে। তিনি খুব ছোট বয়সে কুস্তিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তিনি স্থানীয় রেখা তীর গ্রামে তাঁর প্রাথমিক কুস্তি প্রশিক্ষণ নেন। তাঁর প্রশিক্ষক ছিলেন গুরু হনুমান প্রসাদ।

কুস্তির কেরিয়ার

সিং একজন প্রতিভাবান কুস্তিগির ছিলেন। তিনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারতের জাতীয় কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছিলেন। তিনি ১৯৫২ সালে হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে অংশ নিয়েছিলেন এবং সপ্তম স্থান অর্জন করেছিলেন। তিনি ১৯৫৪ সালের কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণ এবং ১৯৫৮ সালের এশিয়ান গেমসে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন।

সিংয়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল ১৯৫৮ সালের গ্রীষ্মকালীন এশিয়ান গেমসে। তিনি দুটি গুরুতর আঘাতের পরেও স্বর্ণ পদক জিতেছিলেন। তাঁর অসাধারণ ইচ্ছাশক্তি এবং দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কুস্তি করা তাঁর জয়ের কারণ হয়েছিল।

রাজনৈতিক ক্যারিয়ার

সিং ১৯৬২ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৭১ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি ক্রীড়া, যুবক এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের রাজ্যমন্ত্রীও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সিং একজন সমাজকর্মীও ছিলেন। তিনি বহু সামাজিক এবং শিক্ষা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ব্রিজ ভূষণ সিনহা কুস্তি অ্যাকাডেমি যা ভারতের শীর্ষস্থানীয় কুস্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি।

মৃত্যু 및 উত্তরাধিকার

ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং ৩০ ডিসেম্বর, ১৯৮২ সালে মারা যান। তাঁর মৃত্যু ভারতীয় কুস্তি জগতে একটি বড় ক্ষতি ছিল। তাঁর স্মৃতিতে, ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং মেমোরিয়াল কুস্তি টুর্নামেন্ট প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়।

সিং ভারতীয় কুস্তির একজন কিংবদন্তি। তাঁর অসাধারণ কুস্তি দক্ষতা, দৃঢ় সংকল্প এবং সমাজকল্যাণে অবদান তাঁকে দেশের সবচেয়ে সম্মানিত ক্রীড়াবিদদের একজন করে তুলেছে। তাঁর উত্তরাধিকার চিরকাল ভারতীয় কুস্তিতে প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।

ব্যক্তিগত বিন্দু

ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং একজন দৃঢ় মনোভাবের মানুষ ছিলেন। তিনি নিজের লক্ষ্য অর্জনে কখনোই হাল ছাড়তেন না। তিনি একজন পরিশ্রমী এবং নিষ্ঠাবান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কুস্তির প্রতি তাঁর অদম্য ভালোবাসার জন্যও পরিচিত ছিলেন।

সিংয়ের মৃত্যু ভারতীয় কুস্তির জগতে একটি বড় ক্ষতি। তবে তাঁর উত্তরাধিকার চিরকাল কুস্তিগীরদের এবং ক্রীড়া প্রেমীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

আজকের তরুণ প্রজন্মকে ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া উচিত। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন যে কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে আমরা যেকোনো obstacles অতিক্রম করতে পারি। তাঁর উদাহরণ আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করবে যা যা সম্ভব।